স্বাস্থ্য

পিরিয়ড / মাসিক কি  ? মাসিক এর সময় কি খাবেন আর কি খাবেন না ?

 মাসিক কি  ?

মেয়েদের প্রতিমাসে যৌতিপথ  দিয়ে  রক্তচাপ হয় তাকে মাসিক বা ঋতুস্রাব বলে  । ঋতুস্রাব সাধারণত ১০ থেকে ১৪ বৎসর  বয়সে শুরু হয় এবং ৪৫ থেকে ৫০ পযন্ত বৎসর পটিমাস এ এক বার হয়ে থাকে  । প্রতিমাসে ৩ থেকে ৭ দিন ঋতুস্রাব হয়ে থাকে  ।  প্রথম ২থেকে ৩ দিন বেশি এবং পরবর্তী দিনগুলোতে কম ঋতুস্রাব হৈয়ে থাকে  । প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে। মাসিক চলাকালীন পেটব্যথা, পিঠব্যথা, বমি বমি ভাব হতে পারে। আর যাদের এই মাসিক ঋতুচক্র প্রতি মাসে হয় না অথবা দুই মাস আবার কখনও ৪ মাস পরপর হয়, তখন তাকে অনিয়মিত পিরিয়ড বলে। অনিয়মিত পিরিয়ড নারীদের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

ঋতুস্রাব এর ব্যথা কমানোর উপায়

গরম পানির সেঁক

মাসিক এর ব্যথা গরম পানির সেঁক খুব উপকারী  । হট বেগের ভিতর গরম পানি দিয়ে সেঁক দিতে পারেন বা গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এতে ও ঋতুস্রাব এর ব্যথা   স্বস্তি পাবে  ।

আদা

আদা ঋতুস্রাব এর ব্যথা কমাতে খুব উপকারী  । এ সময় আদা চা খেলে বেশ উপকার পাওয়া যাই  । এ ছাড়া আদা , মধু, গরম পানি মিশিয়ে দিনে ৪ থেকে ৫বার পান করতে পারেন  ।

পেঁপে

মাসিক ব্যাথা রোধের জন্য পেঁপে খাওয়া বেশ কার্যকরী  । মাসিক এর সময় নিয়মিত পেঁপে খান  । কাঁচা পেঁপে খেলে মাসিকের ব্যাথা কমিয়ে দেয়  ।

ল্যাভেন্ডার অয়েল

মাসিক এর ব্যাথার  সময় পেটে কৈয়েক ফোটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মালিশ করুন  । ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে এটি আপনার ব্যাথা কমিয়ে দেবে  অনেকখানি  ।

এলোভেরা রস

এলোভেরা রস এর সাথে মধু মিশিয়ে একটি জুস তৈরি করুন  । মাসিক এর ব্যাথার সময় দিনে কয়েকবার  পান করুন  ।

পানি ও আপনি জাতীয় খাবার

মাসিক এর সময় প্রচুর পরিমান এ পানি খান  । কেননা এই সময় শরীরে পানি শুন্যতা দেখা দেয়  ।

হালকা ব্যায়াম করুন

 মাসিক এর ব্যাথার কারণে ব্যায়াম করতে পারেন না । কিন্তু একটি পরিক্ষা অনুযায়ী সহজ সরল যোগব্যায়াম হাঁটাচলা করলে ব্যাথা কমতে পারে  । তবে এ সময় ভারী কাজ করা ঠিক না  । 

ফ্যাট জাতীয় খাবার, অ্যালকোহল, ক্যাফেইন থেকে দূরে থাকুন- ঋতুস্রাবের সময় অধিক তেল ও মশলাযুক্ত খাবার, মদ, ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় গ্রহণ করা উচিত নয়। এর ফলে শরীরে পানির অভাব দেখা দেয় এবং পেট ফুলে যেতে পারে।

কোন ধরণের খাবার খেলে পেট ব্যাথা কমতে পারে

ডার্ক চকলেট  , পালংশাক , ব্রকলি , কমলালেবু , এক মুঠো বাদম  (পেস্তা বাদাম  ) সূর্যমুখী বীজ  , ক্যামোমিল চা  , আদা চা  , গ্রীন টি   ইত্যাদি  ।

মাসিক এর সময় কোন খাবার  খাবেন

পানি 

 মাসিক এর সময় রক্তের পাশাপাশি পানি ও শরীর থেকে বেরিয়ে যাই  । এর অভাব পূরণ করতে হলে প্রচুর পরিমান এ পানি পান করতে হবে  । তবে কোনো পানীয় নয় , চা ,  কফি  , কোমল পানীয় ইত্যাদি দিয়ে পূরণ করা সম্ভব না  । 

মেগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম

 মেগনেসিয়াম ও পটাসিয়ামযুক্ত খাবার মাথাব্যথা , পেটব্যাথা , মাংশ পেশি ব্যাথা মতো লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে  । মিষ্টি কুমড়ার বিচি , কোলা  , মিষ্টি আলু  , বিনস  , এভোকেডো ইত্যাদি মেগ্নেসিয়াম পটাসিয়াম যা বিষণ্ণতা দূর করে  । 

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার  , মাছ  , পানি  , ফল , সবজি খেতে হবে  । যেমন :মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা, ডাঁটাশাক, কচুশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি খেতে হবে। এ ছাড়া ফুলকপির পাতা, ছোলাশাক, ধনেপাতা, তরমুজ, পাকা তেঁতুল, কালো জাম, খেজুর ও আমড়া  খাওয়া ভালো  ।  

 মাছ: ইলিশ, কোরাল, রূপচাঁদা, বেলে, চিংড়ি, ফোঁপা, লইট্টা, লাইখ্যাসহ প্রভৃতি সামুদ্রিক মাছে রয়েছে মিনারেল, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি। এগুলো পিরিয়ডকালে শরীরের ক্ষয় পূরণ করে ও ব্যথা কমাতে ভূমিকা রাখে।

ফলমূল: শরীরে আয়রনের শোষণরোধে ভিটামিন সি জরুরি। পেয়ারা, আমড়া, আমলকী, লেবু, জলপাই, জাম্বুরা ও পাকা টমেটোয় আছে প্রচুর ভিটামিন সি।

মাসিক এর সময় কোন খাবার  খাবেন  না

  • ফ্যাট বা চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়া ভালো। কারণ, এ সময় শরীরে কিছু হরমোনের পরিবর্তন হয়, ওজন একটু বাড়ে। চর্বি বা তেলযুক্ত খাবার খেলে অস্বস্তি বাড়ে।
  • মিষ্টি খাবার বেশি খাওয়া উচিত নয়। এতে রক্তে সুগারের মাত্রার পরিবর্তন হতে পারে। তাতে মেজাজ খারাপ, মুড সুইং হতে পারে।
  • লবণ কম খাওয়া উচিত। কারণ, লবণ শরীরে পানি জমানো ও ফোলার প্রবণতা বাড়াবে। একই কারণে প্রক্রিয়াজাত খাবারও খেতে বারণ।
  • চা ও কফিতে থাকা ক্যাফেইনের কারণে অনেকের পেটব্যথা বা অ্যাসিডিটি  বাড়তে পারে। বুক ধড়ফড় করে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
  • দুধজাতীয় খাবার যেমন পনির, চিজ, আইসক্রিম বেশি না খাওয়াই ভালো। এগুলোতে পেটের অস্বস্তি ও বদহজম বেড়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *