জেনে নিন হাই প্রেসারের সমস্যাই কোন খাবার খাবেন আর কোন খাবার খাবেন না
উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসারের সমস্যাকে বলা হয় নীরব ঘাতক । এটি শরীরকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় । ডক্টরের পরামর্শ মোতে ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি খাদ্যভ্যাসে কড়া নজর দেওয়া দরকার । রক্তচাপ (Hypertension) কমাতে ঔষধ খাওয়ার প্রচলন অনেক আগে থেকেই আছে। কিন্তু আজ আমরা রক্তচাপ কমাতে বেশ কিছু খাবার নিয়ে আলোচনা করবো। লবণ ছেড়ে দিন, ব্যায়াম (Exercise) শুরু করুন এবং আপনার খাদ্য তালিকায় এই ১৫ টি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার যোগ করুন, রক্তচাপ এমনিতেই কমে যাবে! একসময় রক্তচাপ ১৪০/৮০ থাকাকে উচ্চ রক্তচাপের সর্বনিন্ম মাত্রা বলে ধরা হলেও এখন ১৩০/৮০ থাকলেই উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। উচ্চ রক্তচাপে একটি দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোকই ভুগে থাকে যা হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack), স্ট্রোকসহ (Stroke) অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়।
যে খাবারগুলি নিয়ম মেনে খেতে হবে :
১ . প্রতিদিন তাজা ফল যেমন : লেবু , পেয়ারা , আমলকী , আপেল , কমলালেবু , বেদেনা , কলা , ন্যাশপাতি , পেঁপে ইত্যাদি খেতে পারেন ।
২ . প্রচুর শাক-সবজি যেমন : পালংশাক , কলমিশাক , বাঁধাকপি , ফুলকপি , টমেটো , শসা , লাউ , মটরশুটি , ঢেড়শ , বেগুন , কুমড়া ইত্যাদি ।
৩ . খাদ্যতালিকায় পটাশিয়াম রয়েছে এমন খাবারের পরিমান বাড়াতে পারলে হাই পেসার বা উচ্চ-রক্তচাপ নিয়ন্তণে রাখা যায় । যেমন : ডাবের পানি , কলা , টমেটো ইত্যাদি ।
৪ . সকাল এ খালিপেটে একমুঠো ভেজানো বাদাম খান যেমন : চিনাবাদাম , কাজু বাদাম এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ কমাতে শালগম, তিসি, ডার্ক চকলেট ও কালিজিরা ভালো কাজ করে ইত্যাদি ।
৫ . রোজ মাত্র মিনিট ১৫ হাঁটাহাঁটি করলেই ব্লাড প্রেশার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তার ওপর যদি কিছুটা এক্সারসাইজ (exercise) করা যায়, তা হলে তো কথাই নেই। তাতেও রক্তচাপ কমবে ।
৬ . ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়ার অন্য কারণ মানসিক চাপ। নিয়মিত মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে রক্তচাপ এবং ব্লাড সুগার— দুটোই বাড়তে থাকে। তাই এই চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
৭ . পানি ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রোজ অন্তত তিন থেকে চার লিটার পানি খান। তাহলে শরীরে দূষিত পদার্থ জমা হবে না। এবং রক্তচাপও কম থাকবে।
৮ . ডিমের কুসুম, খাসির মাংস, গরুর মাংস ইত্যাদি কোলেস্টেরল বাড়ায়। তাই এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৯ . গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন এবং ফাইবার থাকায় তা রক্ত পরিষ্কার করতে এবং রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রতিদিন খাবারের তালিকা অন্ততঃ একটি করে গাজর রাখুন। এছাড়াও আপনি সালাদ হিসেবে গাজর খেতে পারেন।
১০ . একেবারে ঠিক শুনেছেন! নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে যদি তুলসি পাতার রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে রক্ত চাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসতে সময় লাগে না।
১১ . আপনার খাদ্যতালিকায় আদা রাখুন। আদা একটি সুপারফুড। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এছাড়াও এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও পেশি শিথিল করে। আপনার চা, স্যুপ তরকারিসহ বিভিন্ন পানীয়তে আদা যোগ করতে পারেন।
তবে এই নিয়মগুলো মেনে চলার পাশাপাশি নিয়মিত ব্লাড প্রেশার মাপতেও হবে। হঠাৎ রক্তচাপ বাড়তে শুরু করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।
যে খাবারগুলি খাওয়া যাবে না :
১ . মুরগির চামড়া এবং ডিমের কুসুম খেলে রক্তচাপ বা হায় পেসার বৃদ্ধি পায় সেই সাথে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। তাছাড়া মুরগি ত্বকে উচ্চ মাত্রার চর্বি থাকে যা মানুষের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ।
২ . দুধ বা দুগ্ধজাত খাবারও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর ।
৩ . বেশি নুন ,চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না । অতিরিক্ত ঘি- মাখন , ফ্যাটযুক্ত খাবার কেক , পেস্টি , পরোটা , লুচি , আইসক্রিম খাওয়া যাবে না ।

